বাংলা ভাষার উৎপত্তিবাংলা ভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্যবাংলা ভাষার উৎপত্তি

Rate this post

পাঠক আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালই আছেন।আপনি কি বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিতে চাচ্ছে? যদি তাই হয় তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আমরা এখানে এই ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি স্বরূপ বিভিন্ন আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আমরা এখানে বাংলা ইংরেজি এবং গণিত এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং টপিক নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি আপনি এখানে আপনার কাঙ্ক্ষিত আশা সম্পূর্ণ হবে। আজকে আমরা ভাষা থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনা করব। আজকের আলোচনার প্রফিট হল বাংলা ভাষার গুরুত্ব বাংলা ভাষার উৎপত্তি অর্থাৎ বাংলা ভাষা সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করব। তো চলুন শুরু করা যাক।

বাংলা ভাষার গুরুত্ব

মানুষের মধ্যে বাহ্যিক ও আন্তরিক যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ বাহন ভাষা। চারটি কারণে বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে বাংলা ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আমাদের প্রাণের ভাষা- মাতৃভাষা।

এই ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এ দেশের আপামর মানুষ তীব্র আন্দোলন করেছে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বস্তু দিয়েছে, জীবন দিয়েছে।

ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশের মানুষ বাঙালি জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছে

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো, জাতিসংঘ। তার পর থেকেই পৃথিবীর সব দেশে এই দিবসটি মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে।

বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে ভাবের, আবেগের, অনুভবের, অভিজ্ঞতার, দক্ষতার, আবিষ্কারের, উদ্ভাবনের তথা সুজানশীলতার ও যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ বাহন বাংলা ভাষা। পরিবার, সমাজ তথা জাতীয় জীবনের অন্বয় বা সম্পর্ক গড়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম এই ভাষা।

ভাষা না থাকলে আমাদের মধ্যকার যে বন্ধন, হৃদয়ের যে মিথস্ক্রিয়া, সচেতন একাত্মবোধ এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা তা কখনো সম্ভব হতো না। আজকের দিনে ব্যাপকভাবে প্রসারিত ভাবনা বা চিন্তার জগতের নানা বিষয়ের উপস্থাপনা, একটির সাথে অন্যটির

সম্পর্ক ও সমন্বয়, বিচার-বিবেচনা, তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজকর্ম এই ভাষার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। মহাকাশ গবেষণার প্রযুক্তি ও সংকেত ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বাংলা ভাষা একটি স্থান করে নিয়েছে।

বাংলা ভাষার উৎস

অর্থাৎ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-পরিবারই বাংলা ভাষার আদি উৎস। ভাষার স্বাভাবিক পরিবর্তন ও ক্রমবিকাশের ধারায় মধ্যবর্তী কিছু স্তর পেরিয়ে বাংলা ভাষা জন্ম লাভ করেছে । এই বিবর্তনে বাংলা ভাষাকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্তর অতিক্রম করতে হয়েছে সেগুলো হলো :

এশিয়ার কিরগিজ তৃণভূমির ঊষর অঞ্চল ছিল আদি ইন্দো-ইউরোপীয়দের মূল বাসভূমি।

আনুমানিক ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বে এদের একটি শাখা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার থেকে জাত আধুনিক ভাষাগুলোই এখন সমৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে। ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, হিস্পানি, রুশ, পর্তুগিজ, ফারসি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সিংহলি প্রভৃতি ভাষার মতো বাংলা ভাষাও ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-পরিবারের সদস্য।

ইন্দো-ইউরোপীয় ইন্দো-ইরানীয় ভারতীয় আর্য → প্রাকৃত বাংলা। আনুমানিক এক হাজার বছর আগে পূর্ব ভারতীয় প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে। অহমিয়া ও ওড়িয়া বাংলা ভাষার নিকটতম আত্মীয়। ধ্রুপদি ভাষা সংস্কৃত ও পালির সঙ্গে বাংলা ভাষার রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

বাংলা ভাষার মূল অনুসন্ধান করে ভাষাবিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। মধ্য দক্ষিণ-পূর্ব রাশিয়া, কাজাকিস্তান এবং ককেসাস পর্বতমালা অতিক্রম করে মেসোপটেমিয়ায় স্থিত হয়। প্রায় এক হাজার বছরে আসিরীয় ও বেবিলনীয় সেমেটিক সংস্কৃতির সাথে মিশে গিয়ে এটি একটি বিশিষ্ট রূপ ধারণ করে।

কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ইন্দো-ইউরোপীয়দের কয়েকটি উপজাতি মূল ভাষাসহ ইরান, আফগানিস্তান ও ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে বসবাস শুরু করে। তার পরও তারা ভারতবর্ষের আদিম অধিবাসীদের ভাষা-সংস্কৃতি ও দ্রাবিড় সভ্যতা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ইরানীয় ও আর্য উপভাষা প্রায় অভিন্ন ছিল। তার পর ক্রমশ এই দুটি ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রূপে গড়ে ওঠে। একটি ইন্দো-ইরানীয় এবং অন্যটি ইন্দো-আর্য ভাষা হিসেবে বিকশিত হতে থাকে।

সম্মানিত পাঠক বাংলা ভাষা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছি। আশা করি আজকের টপিকটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আজকে টপিক নিয়ে কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Comment