ভাষা, বাংলা ভাষা ও ভাষা রীতি

Rate this post

প্রিয় পাঠক আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালই আছেন। আপনারা অনেকেই অনলাইনে চাকরি প্রস্তুতি নিতে ইচ্ছুক এবং যদি তাই হয় তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা এই ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকি আপনি যদি সরকারি বেসরকারি এবং প্রাইভেট যেকোনো চাকরির প্রিলিমিনারি এবং লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চান তাহলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে লেগে থাকুন। আশা করি এখান থেকে আপনি সকল চাকরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবেন আজকে আমরা বাংলা ভাষা ও ভাষারীতি থেকে বিভিন্ন তথ্য সহ বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক

ভাষা কি


ভাষা মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন, কোনো বিশেষ। জনসমাজে ব্যবহৃত, স্বতন্ত্রভাবে অবস্থিত, তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দসমষ্টিকে ভাষা বলে ।

বাংলা ভাষা কাকে বলে

পৃথিবীতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভাষা প্রচলিত রয়েছে। পৃথিবীর অন্তত ৩০ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মাতৃভাষা। এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা।

বাংলা ভাষার রূপ ও রীতি

বাংলা, ইংরেজি, আরবি, হিন্দি প্রভৃতি ভাষার মৌখিক বা কথ্য এবং লৈখিক বা লেখ্য এই দুটি রূপ দেখা যায়। ভাষার মৌখিক রূপের আবার রয়েছে একাধিক রীতি: একটি প্রমিত রীতি, অপরটি আঞ্চলিক কথ্য রীতি। ভাষার লৈখিক রূপেও ভিন্নতা থাকে। বাংলা লৈখিক রূপেও রয়েছে দুটো রীতি: একটি সাধু ও অপরটি কথ্য বা চলিত ।

ব্যাকরণ

‘ব্যাকরণ’ শব্দটি সংস্কৃত। ‘ব্যাকরণ’ (বি+আ+√কৃ+অন) শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ- বিশেষভাবে বিশ্লেষণ। যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।

বাংলা ব্যাকরণ

প্রথম বাংলা ভাষার ব্যাকরণ পর্তুগিজ ভাষায় লেখা হয়েছিল। এর নাম f Vocabolario em Idioma Bengalla, e Portuguez Dividido em Duas Partes, রচয়িতা মনোএল দ্য আসসুম্পসাঁও। বাংলা ভাষায় প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন রাজা রামমোহন রায়। তাঁর লেখা ব্যাকরণের নাম ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ (১৮৩৩)।

বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়

বাংলা ব্যাকরণে প্রধানত নিম্নলিখিত ৪টি বিষয়ের আলোচনা করা হয়:

১. ধ্বনিতত্ত্ব: বর্ণ প্রকরণ, বর্ণের উচ্চারণ, বর্ণবিন্যাস, ধ্বনির উচ্চারণপ্রণালী, উচ্চারণের স্থান, ধ্বনিসংযোগ বা সন্ধি, ধ্বনির পরিবর্তন ও লোপ, ণত্ব ও ষত্ব বিধান ইত্যাদি বিষয় বাংলা ব্যাকরণে ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।

২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব: শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্বে আলোচিত হয় শব্দমূল,শব্দের ব্যুৎপত্তি, শব্দের গঠন, বচন ও লিঙ্গ, ক্রিয়ামূল, ধাতুরূপ,ক্রিয়ার কাল, পুরুষ, কারক, সমাস ইত্যাদি।

৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম: বাক্য, বাক্যের গঠন, শ্রেণি, বাক্য পরিবর্তন, বাক্যে পদের ক্রম, উক্তি, বাচ্য, বাগ্ধারা, বাক্য সংকোচন, বিরামচিহ্ন ইত্যাদি বিষয় ‘বাক্যতত্ত্বে’ আলোচিত হয়। বাক্যের মধ্যে কোন পদের পর কোন পদ বসে, কোন পদের স্থান কোথায়, বাক্যতত্ত্বে এসবের পূর্ণ বিশ্লেষণ থাকে।

৪. অর্থতত্ত্ব: শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থবিচার, অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ, যেমন— মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ ইত্যাদি অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয় ।

এছাড়া অভিধানতত্ত্ব (Lexicography), ছন্দ ও অলংকার প্রভৃতিও ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় ।

বাংলা ভাষা ও ভাষারীতি থেকে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা আসা প্রশ্ন এবং উত্তর

মানুষের মুখে উচ্চারিত অর্থবোধক ও মনোভাব প্রকাশক ধ্বনিসমষ্টিকে বলে- ভাষা।

বাংলা ভাষা— ইন্দো-ইউরোপীয় মূল ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত ।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে— গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে ।

‘প্রাকৃত’ শব্দের অর্থ— স্বাভাবিক।

বাঙ্গালি ভাষার পরিবর্তে প্রথম ‘বাঙ্গালা ভাষা’ ব্যবহার করেন— পর্তুগিজ পাদ্রী মনোএল দ্য আস্সুম্পসাঁও ।

বাংলা লিপির বর্ণ মুদ্রণ উপযোগী করে তোলেন- চার্লস উইলকিনস ও পঞ্চানন কর্মকার ।

বাংলা লিপির বর্ণের আধুনিক রূপ দেন— পঞ্চানন কর্মকার।

আধুনিক বাংলা লিপি স্থায়ীরূপ লাভ করে— অষ্টাদশ শতকে ।

ব্যাকরণের মূলভিত্তি— ভাষা ৷

ভাষার সংবিধান বলা হয়— ব্যাকরণকে ।

বাংলা ভাষায় ‘ব্যাকরণ’ শব্দটি এসেছে— সংস্কৃত ভাষা থেকে ।

ব্যাকরণ’ শব্দের সঠিক অর্থ— বিশেষভাবে বিশ্লেষণ ।

বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থ— গৌড়ীয় ব্যাকরণ।

ভাষার মৌলিক উপাদান— শব্দ । ভাষার মূল উপকরণ— বাক্য।

বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে— প্রাকৃত ভাষা থেকে।

বাংলা ভাষার মৌলিক অংশ— ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, অর্থ

বাংলা ভাষায় স্পর্শ বর্ণ- ২৫টি।

বাংলা ভাষার উৎস – ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষাগোষ্ঠী ।

জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা পৃথিবীর— চতুর্থ বৃহত্তম ভাষা ।

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি লোক কথা বলে— চীনের মান্দারিন ভাষায় ।

পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষার রীতি— দুইটি।

বাংলা ভাষার সূচনাপর্ব থেকে যে ভাষারীতি প্রচলিত রয়েছে তাকে বলে— সাধু রীতি ।

সাধু ভাষায় বেশি ব্যবহৃত হয়— তৎসম শব্দ ।

সাহিত্যের গাম্ভীর্য ও আভিজাত্য প্রকাশ পায়— সাধু ভাষায়।

সাধু ভাষা সাধারণত অনুপযোগী— নাটকের সংলাপে ।

সন্ধি ও সমাসবদ্ধ পদ বেশি থাকে— সাধু রীতিতে

সাধু ভাষার প্রচলন স্তিমিত হয়— বিংশ শতাব্দীতে ।

ক্রিয়াপদ পূর্ণাঙ্গরূপে ব্যবহৃত হয়— সাধু রীতিতে ।

‘সাধুভাষা’ পরিভাষাটি প্রথম ব্যবহার করেন— রাজা রামমোহন রায়।

কৃত্রিম ও প্রাচীন বৈশিষ্ট্যের অনুসারী— সাধু রীতি।

বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির রূপকার, স্রষ্টা ও প্রথম ব্যবহারকারী— প্রমথ চৌধুরী ।

বর্তমানে সর্বজনস্বীকৃত ভাষা— চলিত ভাষা ।

তদ্ভব, দেশি, বিদেশি শব্দ বেশি ব্যবহৃত হয়— চলিত রীতিতে ।

বক্তৃতা ও নাটকের সংলাপের জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়— চলিত ভাষা ।

চলিত ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য — তদ্ভব শব্দবহুলতা ।

পরিবর্তনশীল ভাষা — চলিত ।

চাকরি প্রত্যাশী বন্ধুরা উপরে আমরা বাংলা ভাষা ও ভাষারীতি থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তর সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি যদি বাংলা ভাষা ও ভাষারীতির এই টপিকটি পড়েন তাহলে আপনার প্রস্তুতি সম্পন্ন মনে করতে পারেন। বাংলা ভাষা ও ভাষারীতি থেকে এর বাইরে না দেখলেও চলবে তাই আজকের পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং পরবর্তীতে করার জন্য সেভ করে রাখতে পারেন ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Comment