বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন, যদিও বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট কিংবা মশার কয়েল বা সিগারেট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন,
কিন্তু নাশকতা নিয়েও তাদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘’আমরা দুইটা কারণ নিয়ে এগোচ্ছি। এক হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট অথবা মনুষ্য সৃষ্ট কোন কারণ, হয়তো কয়েল বা কোন কিছু থেকে।
পরপর কয়েকটি আগুনের ঘটনায় নাশকতা হচ্ছে কিনা, সেই সন্দেহ তৈরি হওয়ায়, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। ‘’আমি বলেছি, খতিয়ে দেখার জন্য। সেটা ইন্টেলিজেন্স বলতে পারবে। কারণ সেটা বের করার ক্যাপাবিলিটি আমাদের নেই।
অনেকগুলো আগুনের ঘটনা ঘটেছে বলেই আমরা বলেছি, এটা নাশকতা কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার। কম সময়ে এতোগুলো আগুনের ঘটনা এবং টাইমগুলোও একই রকমের, সেজন্যেই সন্দেহটা তৈরি হয়েছে,’’ তিনি বলছেন।
শুক্রবার নিউ সুপার মার্কেটের আগুনে দুইশ থেকে আড়াইশো দোকান পুড়ে গেছে। এর মাত্র কয়েকদিন আগে ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে চার হাজারের বেশি দোকান পুড়ে যায়। এই দুইটি মার্কেটেই আগুন লেগেছে ভোরে। একই প্যাটার্নের আগুন সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শনিবার পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের প্রতিটি ঘটনা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। নাশকতার প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবশ্য রবিবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অবশ্য বলেছেন, আগুন লাগার কারণ নিয়ে তদন্ত শেষ করার আগে তিনি কোন মন্তব্য করতে চান না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘’প্রত্যেকটা আগুন লাগার পেছনে কারণ থাকে। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট কিংবা এটা সেটা। নাশকতাও থাকে, আমরা এখনো সুনিশ্চিত নই। আমরা ইনকোয়ারি করছি।‘’
‘’সবার কাছে একটা প্রশ্ন জাগছে, এত ঘন ঘন এবং শেষ রাতেই দুর্ঘটনাগুলি ঘটে। এটা সবাই প্রশ্ন করছে। আমরা ইনকোয়ারির আগে, সঠিক তদন্তের আগে বলতে পারবো না।
আমি সুনিশ্চিত না হয়ে কিছু বলছি না,’’ বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শনিবার ভোরে চাঁদনী চক ও আশেপাশের মার্কেটের মধ্যে থাকা একটি ফুট ওভারব্রিজ সরিয়ে নেয়ার কাজ করছিল ডিএসসিসি।
সেই সময় বিদ্যুতের লাইনে আগুন লেগে যায়। তবে সেই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে ডিএসসিসি বলেছে, ফুট ওভারব্রিজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের স্থানটি অন্তত চারশো গজ দূরে। এছাড়া সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নও করে দেয়া হয়েছিল।