বিসিএস ক্যাডার কি এবং বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সম্পর্কে জানুন

Rate this post

সম্মানিত চাকরি প্রত্যাশিত বন্ধুরা আশা করি ভালো আছেন। আজকের টাইটেল দেখে বুজতে পারছেন যে আজকে আমরা কি আলোচনা করতে যাচ্ছি। তারপরও বলছি নিচে আমরা ক্যাডার মানে কি? ক্যাডার কত প্রকার? বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট, বিসিএস পরীক্ষা কি? সিভিল সার্ভিস জিনিসটা কি? বিসিএস অফিসারদেরকে প্রথম শ্রেনীর গেজেটেড অফিসার বলা হয় কেন?  বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা কি? ইত্যাদিসহ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশন সম্পর্কে নানা তথ্য নিয়ে আজকের আয়োজন।

বিসিএস ক্যাডার কি এবং বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সম্পর্কে জানুন

বিসিএস পরীক্ষা কি? 

উত্তরঃ বিসিএস এর পুরো অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। আর বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে এই সিভিল সার্ভিসে ঢোকার জন্যে যে পরীক্ষা দেওয়া হয় সেইটা। বিসিএস পরীক্ষা বা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা হল দেশব্যাপী পরিচালিত একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা যা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) কর্তৃক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিসিএস (প্রশাসন), বিসিএস (কর), বিসিএস (পররাষ্ট্র) ও বিসিএস (পুলিশ) সহ ২৬ পদে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পরিচালিত হয়।

সিভিল সার্ভিস জিনিসটা কি? 

উত্তরঃ সিভিল সার্ভিস হচ্ছে সরকারী চাকুরি। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সংক্ষিপ্ত রূপ বিসিএস নামে সর্বাধিক পরিচিতি) হল বাংলাদেশ সরকারের সিভিল সার্ভিস । যে কোন দেশে সরকারী চাকুরি মোটামুটি দু ভাগে বিভক্তঃ মিলিটারি আর সিভিল। মিলিটারি বলতে আর্মি,নেভি, এয়ারফোর্স বোঝায়, আর সিভিল সার্ভিস বলতে প্রশাসন (মানে যাঁরা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলার ডিসি, মন্ত্রনালয়ের সচিব এসব হন), পুলিশ, ট্যাক্স , পররাষ্ট্র, কাস্টমস ,অডিট , শিক্ষা ইত্যাদি ২৭টি সার্ভিসকে বোঝায়। 

ক্যাডার মানে কি? 

উত্তরঃ ক্যাডার মানে হচ্ছে কোন সুনির্দিষ্ট কাজ করার জন্যে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল। সরকারী চাকুরির সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়, তাই এদের সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বা বিসিএস ক্যাডার বলা হয়। 

বিসিএস অফিসারদেরকে প্রথম শ্রেনীর গেজেটেড অফিসার বলা হয় কেন? 

উত্তরঃ বাংলাদেশ সরকারের চাকুরিতে চারটি শ্রেণি আছে,যার সর্বোচ্চ শ্রেণিটাকে বলা হয় প্রথম শ্রেণি বা ফার্স্ট ক্লাস। এদের নিয়োগের সময় সরকারী গেজেট বা বিজ্ঞপ্তি বের হয়, স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সামগ্রিক দিক বিবেচনায় মান মর্যাদা, দায়িত্ব-কর্তব্যের পরিধি এবং সুযোগ সুবিধার দিক দিয়ে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসারগণ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকেন। 

ক্যাডার কত প্রকার? 

উত্তরঃ বিসিএস ক্যাডার মূলতঃ দুই প্রকার। যথা: 

১) জেনারেল (পুলিশ, এডমিন, পররাষ্ট্র ইত্যাদি); 

২) টেকনিকাল (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সড়ক ও জনপদ ইত্যাদি)। জেনারেল ক্যাডারে যে কেউ যে কোন সাবজেক্ট থেকে পরীক্ষা দিয়ে চাকুরি করতে পারেন, কিন্তু টেকনিকাল ক্যাডারে চাকুরি করতে হলে নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা লাগবে। যেমনঃ এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ সরকারী ডাক্তার হয়ে চাকুরি করতে পারবেন না। 

বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা কি? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, নির্দিষ্ট বয়স সীমার ভেতরে বয়স থাকতে হবে। যেকোন বিষয়ে চার বছরের অনার্স বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। তিন বছরের অনার্স ও এক বছরের মাস্টার্স করা প্রার্থীরাও পরীক্ষা দিতে পারবেন। বিদেশে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীরাও শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে তাদের ডিগ্রি বাংলাদেশের চার বছরের ডিগ্রির সমান- এই সার্টিফিকেট দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। 

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট
বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

ভাইয়া আমি তো ডাক্তার / ইঞ্জিনিয়ার / আর্কিটেক্ট / সেক্সোলজিস্ট। আমি কি বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ, ডিপ্লোম্যাট, ট্যাক্স অফিসার ইত্যাদি হতে পারব? নাকি আমি ডাক্তার বলে আমাকে স্বাস্থ্য সার্ভিসেই যেতে হবে? 

উত্তরঃ অবশ্যই পারবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার এই টেকনিকাল ডিগ্রি বিশাল সুবিধা বয়ে আনবে। যেমন, আপনি যদি ডাক্তার হয়ে পুলিশে যোগদান করেন, সেক্ষেত্রে ইউ এন মিশন গুলোতে আপনাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যাবে। আপনি যেমন এক দিক দিয়ে পুলিশের প্রধানও হয়ে যেতে পারেন, আরেক দিক দিয়ে ডাক্তারি প্র্যাকটিসও করতে পারবেন অনুমতি সাপেক্ষে। আপনি ইঞ্জিনিয়ার হলে পুলিশে বিভিন্ন টেকনিকাল ক্রাইমের ট্রেনিং এ আপনাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। বহু ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আছেন যারা টেকনিকাল ক্যাডারে না গিয়ে সচিব, রাষ্ট্রদূত ইত্যাদি হয়েছেন। ইংরেজি পড়েছেন বলেই শেকস্পীয়ার হতে হবে, এই ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। 

ভাইয়া, আমি তো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় , বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়, মফস্বলের ডিগ্রি কলেজ , মঙ্গলগ্রহের এলিয়েন একাডেমি এসব জায়গা থেকে পড়াশোনা করেছি। আমি কি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারব? 

উত্তরঃ ভাই, আপনি যেখানেই পড়েন না কেন, আপনার যদি লাইফে একটার বেশি থার্ড ক্লাস না থাকে এবং আপনারর সব মিলিয়ে যদি ৬ পয়েন্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা পূরণ করে থাকেন- আপনি পরীক্ষা দিতে পারবেন। ইংলিশ মিডিয়ামের / মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরাও পরীক্ষা দিতে পারবেন। আপনার প্রতিষ্ঠান না, পরীক্ষার খাতায় আপনি কি লিখছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনি চাকুরি পাবেন কি পাবেন না। 

ভাইয়া, সিভিল সার্ভিসের মেডিকেল টেস্ট কেমন হয়? পুলিশের মেডিকেল টেস্ট কি আর্মির মত হয়? আর এই মেডিকেল টেস্টে কি বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে? 

উত্তরঃ সিভিল সার্ভিসের মেডিকেল টেস্ট একেবারেই সাধারণ এবং বেসিক হয়, যে কোন সরকারী হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলেই জানতে পারবেন। আপনার যদি অতি গুরুতর কোন সমস্যা না থাকে, সেক্ষেত্রে বাদ পড়ার সম্ভাবনা নেই। পুলিশের মেডিকেল টেস্ট বাকি সব ক্যাডারদের মতই হয়, আলাদা না। শুধুমাত্র উচ্চতা আর ওজনে পার্থক্য আছে কিছুটা। পুলিশের ক্ষেত্রে চোখের নিয়ম হচ্ছে, আপনার চোখ যাই হোক না কেন, যদি চশমা পরার পর সেটা ৬/৬ হয়, তাহলে কোন সমস্যা নেই। 

ভাইয়া, শুনেছি অনার্স কমপ্লিট না করেও বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়, এটা কি সত্যি? 

উত্তরঃ না, অনার্স না করে পরীক্ষা দেয়া যায়না। তবে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখের মধ্যে অনার্স এর সব পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিন্তু রেজাল্ট দেয়া বাকি আছে- এরকম হলে বিভাগীয় পরীক্ষার প্রধানের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে পরীক্ষা দেয়া যায়। পরবর্তীতে ভাইভার সময় মূল সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হয়। যদি স্বপ্ন থাকে আপনি একজন BCS CADRE হবেন। তবে সময় নষ্ট না করে, আজকে থেকেই শুরু করে দেন। আপনিও হবেন একজন BCS CADRE, যদি সফল ব্যক্তিদের মত আপনিও ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে পারেন।

প্রিয় পাঠক আশা করি উপরের আলোচনা বুজতে পেরেছেন। আর আজকের আলোচনা থেকে কোন প্রকার প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।  

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি বিসিএস চাকরির প্রস্তুতি বা বিসিএস পরিক্ষা প্রস্তুতি  এবং বিসিএস সম্পর্কে সব সময় নতুন খবর পেতে চান…? তাহলে আমাদের এই পেইজটি ফলো করতে পারেন। এখানে আমরা বিসিএস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আসছি।

Leave a Comment