বিসিএস পরিক্ষার্থী বন্ধুরা, আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছো। উপরের টাইটেল দেখে বুজতেই পেরেছো যে আজকে আমরা বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি | বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা নিয়ে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো। আজকের আর্টিকেল্টি লেখার কারন হল এক বিসিএস পরিক্ষার্থীর অনুরোধে। কারন সে আজকের টপিক নিয়ে প্রশ্ন ছিল। তাই ভাবলাম আজকের টপিক্টি নিয়ে আরো অনেকের সমস্যা থাকতে পারে। তাই সবার উদ্দেশ্যে লিখতে বসে গেলাম। চলো তাহলে টপিকে ফিরে যাওয়া যাক।
বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি | বিসিএস প্রিলিমিনারী পরিক্ষা পদ্ধতি
বিসিএস (ক্যাডার) পদে নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতিঃ বিসিএস পরিক্ষা পদ্ধতি যতোটা সহজ ভেবেছিলে কিন্তু ততোটা সহজ নয়। বিসিএস পরিক্ষা মানে বিশাল প্রতিযোতা। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রণীত বিসিএস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা-২০১৪ অনুযায়ী বিসিএস-এর নিম্নোক্ত ২৬টি ক্যাডারে উপযুক্ত প্রার্থী নিয়োগের উদ্দেশ্যে কমিশন কর্তৃক ৩টি ধাপে সম্পুর্ণ করা হয়।
১। বিসিএস প্রিলিমিনারী পরিক্ষা।
২। বিসিএস লিখিত পরীক্ষা।
৩। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষা।
১। বিসিএস প্রিলিমিনারী পরিক্ষা পদ্ধতিঃ বিসিএস প্রিলি পরিক্ষায় ২০০ নম্বরের MCQ Type Preliminary Test হয়। তারপর শূন্য পদের তুলনায় প্রার্থী সংখ্যা বিপুল হওয়ায় লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই-এর জন্য বিসিএস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা-২০১৪-এর বিধি-৭ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন ২০০ নম্বরের MCQ Type প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণ করে থাকে। ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষা পর্যন্ত ১০০ নম্বরে প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণ করা হতো। বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালা-২০১৪-এর বিধানমতে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষা হতে ২০০ নম্বরের ২ ঘণ্টা সময়ে ১০টি বিষয়ের উপর MCQ Type প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।
২। বিসিএস লিখিত পরীক্ষাঃ ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা (গড় পাস নম্বর ৫০%) প্রিলিমিনারি টেস্ট-এ কমিশন কর্তৃক কৃতকার্য ঘোষিত প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী ২৬টি ক্যাডার সাধারণ ক্যাডার এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার এই দুই ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। ক. সাধারণ ক্যাডারের প্রার্থীদের জন্য ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা। খ. কারিগরি/পেশাগত ক্যাডারের প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা।
৩। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষাঃ বিসিএস প্রিলিমিনারী এবং বিসিএস লিখিত পরিক্ষায় পাশ করার পর বিসিএস ভাইবা পরিক্ষা দিতে পারে একজন পরিক্ষার্থী। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষায় প্রথমে বিসিএস-পরীক্ষার সাক্ষাৎকার বোর্ড গঠন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালার বিধান অনুযায়ী কমিশন নিম্নোক্তভাবে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড গঠন করে থাকে। আর সেই বোর্ড এর মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষার যোগ্যতা | বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা
বিসিএস পরিক্ষা দিতে মোট চার ধরনের যোগ্যতা লাগে। সকল বিসিএসের প্রার্থীদের জন্য বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা (শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বয়স) সমুহ হলঃ
১। শিক্ষাগত যোগ্যতা
২। বয়সসীমা
৩। নাগরিকত্ব এবং
৪। শারীরিক যোগ্যতা
আড়ও পড়ুন…
বি.সি.এস. পরীক্ষা-২০২৩ এর বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্ট ২০২৩
বিসিএস পরীক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতা
বিসিএস নাম শুনলেই অনেক স্টুডেন্ট ভয় পেয়ে যায়। কারন এই পরিক্ষা দিয়ে অনেকেই হতাশ আবার অনেকেই সফল হয়েছে। তবে যতোই কঠিন হোক না কেন আপনি যদি গোছালো বিসিএস প্রস্তুতি নিতে পারেন। তাহলে আপনার জন্য সহজ হবে। তবে যদি আপানার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে। তাই নিচে থেকে বিসিএস পরিক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে নাও।
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর চার বছরের অনার্স পাস করতেই হবে অথবা কেউ যদি তিন বছরের অনার্স বা পাস কোর্সে পড়ে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই মাস্টার্স পাস হতে হবে। শিক্ষা জীবনে একের অধিক তৃতীয় শ্রেণি (3rd Class) থাকলে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবে না।
বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা বয়স
বিসিএস পরিক্ষায় আবেদন করতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বয়স থাকতে হবে। তবে যারা সাধারণ বিসিএস ক্যাডারে পরীক্ষা দেবে, তারা ৩০ বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পারবে। অথচ বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজিএস) পরীক্ষায় ৩২ বছর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ওই ১৪ উপবিধি অনুসারে শিক্ষা ক্যাডারেও ৩২ বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বিসিএস আবেদন এ নাগরিকত্ব
শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি পার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন কোন ব্যক্তি বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিদেশী নাগরিককে বিয়ে করলে বা বিয়ে করার প্রতিজ্ঞা করলে তিনি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
বিসিএস আবেদনের শারীরিক যোগ্যতা
বিসিএস প্রিলিমিনারী, বিসিএস লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেডিকেল টেস্ট করানো হয়। মেডিকেল টেস্টে পাশ না করলে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া যায়না।
বিসিএস পার্থীর মেডিকেল টেস্টে যা দেখা হয়
১। উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ করা হয়।
২। দৃষ্টিশক্তি যাচাই করা হয়।
৩। মূত্র পরীক্ষা করা হয়।
৪। উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপঃ পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৯.৯৯ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ও ওজন যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫৪.৫৪ কেজি হতে হবে।
৫। মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৫.৪৫ কেজি হতে হবে।
প্রিয় পাঠক উপরে আমরা বিসিএস পরিক্ষার যোগ্যতা এবং বিসিএস নিয়োগ পরিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের টপিকটি বুজতে পেরেছেন। আজকের আলোচনা নিয়ে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানা থাকতে হবে। আমরা এই ওয়েবসাইটে বিসিএস পরিক্ষা পদ্ধতি, বিসিএস সার্কুলার , বিসিএস কি , বিসিএস ক্যাডার তালিকা , বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা , বিসিএস পরীক্ষার তারিখ , বিসিএস প্রস্তুতি , বিসিএস পরীক্ষার বিষয়সমূহ , ৪৫ তম বিসিএস পরীক্ষার তারিখ ইত্যাদি সহ বিসিএস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে থাকি। তাই এটি সেভ করে রাখতে পারেন।
আজকের টপিক রিলেটেড প্রশ্ন ও উত্তরঃ বিসিএস পরীক্ষা,বিসিএস প্রস্তুতি,বিসিএস পরীক্ষার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা,বিসিএস পরীক্ষা দিতে কি যোগ্যতা লাগে,বিসিএস,বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা,বিসিএস পরীক্ষা কি,বিসিএস ক্যাডার,বিসিএস পরিক্ষার যোগ্যতা,বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা,বিসিএস ক্যাডারের বেতন,বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা,বিসিএস আবেদনের যোগ্যতা,বিসিএস এর নূন্যতম যোগ্যতা,বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডার চয়েস,বিসিএস এর শিক্ষাগত যোগ্যতা,বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি,কিকি যোগ্যতা বিসিএস পরীক্ষার জন্য ইত্যাদি সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে।