যতি বা বিরাম চিহ্ন কয়টি | যতি চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম

Rate this post

যতি চিহ্ন কাকে বলেঃ মুখের কথাকে লিখিত রূপ দেওয়ার সময়ে কম-বেশি থামা বোঝাতে যেসব চিহ্ন ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে হতে বলে। বক্তব্যকে স্পষ্ট করতেও কিছু চিহ্ন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যতিচিহ্নকে বিরামচিহ্ন বা বিরতিচিহ্নও বলা হয়।

বর্তমানে যতি বা বিরাম চিহ্ন কয়টি ও কি কি

বাংলা ভাষায় প্রচলিত যতিচিহ্নগুলো হলো: 

  • দাঁড়ি (i). 
  • কমা (,), 
  • সেমিকোলন (:), 
  • প্রশ্নচিহ্ন (?), 
  • বিস্ময় চিহ্ন
  • হাইফেন (-), 
  • ড্যাশ (-), 
  • কোলন (:), 
  • বিন্দু (), 
  • লোপচিহ্ন (‘), 
  • ত্রিবিন্দু (….).
  • উদ্ধার (‘-‘,-“), 
  • বন্ধনীচিহ্ন ((-)), ((-)). ([-]). 
  • বিকল্পচিহ্ন (/)

১। দাঁড়ি 

সাধারণত বাক্যের সমাপ্তি নির্দেশ করে। যেমন-

  • প্রাপ্ত ফুটবল খেলা পছন্দ করে।
  •  যথাযথ অনুসন্ধানের পর বলা যাবে কী ঘটেছিল

২. কমা (,)

কমা সামান্য বিরতি নির্দেশ করে। শব্দ, বর্গ ও অধীন বাক্যকে আলাদা করতে কমার ব্যবহার হয়। যেমন – 

  • গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত – বাংলাদেশ এই ছয়টি ঋতুর দেশ। 
  • নিবিড় অধ্যবসায়, কঠোর পরিশ্রম ও সময়নিষ্ঠ থাকলে সাফল্য আসবে। 
  • সুজন, দেখ তো কে এসেছে।
  • কাল তুমি যাকে দেখেছ, তিনি আমার বাবা।
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “পাপকে ঠেকাবার জন্যে কিছু না করাই তো পাপ।”

৩. সেমিকোলন (:)

স্বাধীন অথচ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত একাধিক বাক্যকে এক বাক্যে পরিণত করার কাজে অথবা একই ধরনের বর্ণকে পাশাপাশি সাজাতে সেমিকোলন ব্যবহৃত হয় (যেমন-

  • সোহাগ ক্রিকেট পছন্দ করে; 
  • আমি ফুটবল পছন্দ করি। 
  • কোনো বইয়ের সমালোচনা করা সহজ; 
  • কিন্তু বই লেখা অত সহজ নয়।
  • তিনি পড়েছেন বিজ্ঞান; পেশা ব্যাংকার; আর নেশা সাহিত্যচর্চা।

৪. প্রশ্নচিহ্ন (?)

সাধারণত কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে প্রশ্নচিহ্ন বসে। যেমন –

তারা কখন এসেেছে? 

 বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কি?

৫. বিস্মচিহ্ন (!) 

সাধারণত বিস্ময়, দুঃখ, আনন্দ ইত্যাদি প্রকাশের জন্য বিস্ময়চিহ্ন ব্যবহৃত

       মাকে সে আর চাকরি করবে না।

৬. হাইফেন (-)

বাক্যের মধ্যকার একাধিক পদকে সংযুক্ত করতে হাইফেন ব্যবহৃত হয়) যেমন- মা-বাবার কাছে সন্তানের গৌরব সবচেয়ে বড়ো গৌরব।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই দেশের কল্যানে কাজ করতে হবে।

৭. ড্যাশ (-)

(সাধারণত দুটি থাকাকে এক বাক্যে পরিণত করার কাজে এবং ব্যাখ্যাযোগ্য বাক্যাংশের আগে-পরে

ব্যবহৃত হয়। যেমন বাংলাদেশ দল জয়লাভ করেছে – বিজয়ের আনন্দে দেশের জনগণ উচ্ছ্বসিত।

ঐ লোকটি – যিনি গতকাল এসেছিলেন তিনি আমার মামা।

৮. কোলন (:)

বাক্যের প্রথম অংশের কোনো উক্তিকে দ্বিতীয় অংশে ব্যাখ্যা করা এবং উদাহরণ উপস্থাপনের কাজে কোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন-

ভাষার দুটি রূপ: কথ্য ও লেখ্য।

সভার সিদ্ধান্ত হলো: প্রতি মাসে সব সদস্যকে দশ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে।

৯।  উদ্ধারচিহ্ন (‘ ‘), (-)

কোনো কিছু উদ্ধৃত করার কাজে উদ্ধারচিহ্নের ব্যবহার হয়। উদ্ধারচিহ্ন দুই রকম: একক ও দ্বৈত

সিরাজউদ্দৌলা” একটি ঐতিহাসিক নাটক।

আমাদের কণ্ঠ শুনে প্রিয়স্তি ঘর থেকে বেরিয়ে এল, ও আপনারা এসে গেছেন। বাসা চিনতে কোনো কষ্ট হয়নি তো?”

১০. বন্ধনী (), (),

অতিরিক্ত তথ্য উপস্থাপন ও কালনির্দেশের ক্ষেত্রে বন্ধনীর ব্যবহার হয়। বন্ধনী তিন প্রকার: প্রথম বন্ধনী (). দ্বিতীয় বনী || ও তৃতীয় বন্ধনী ।।। যেমন- 

তিনি বাংলা ভাষার বিবর্তন (চর্যাপদের সময় থেকে পরবর্তী) নিয়ে আলোচনা করবেন।

কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত।

১১. বিন্দু (.)

(শব্দসংক্ষেপ, ক্রমনির্দেশ ইত্যাদি কাজে বিন্দু ব্যবহৃত হয়। যেমন

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্

ভাষার প্রধান উপাদান চারটি: ১. ধ্বনি, ২. শব্দ, ৩. বাক্য ও ৪. বাগর্থ।

১২. ত্রিবিন্দু (… )

কোনো অংশ বাদ দিতে চাইলে ত্রিবিন্দুর ব্যবহার হয়। যেমন তিনি রেগে গিয়ে বললেন, “তার মানে তুমি একটা …।”

আমাদের ঐক্য বাইরের। … এ ঐক্য জড় অকর্মক, সজীব সকর্মক নয় ।

১৩. বিকল্পচিহ্ন (/)

একটির বদলে অন্যটির সম্ভাবনা বোঝাতে বিকল্পচিহ্নের ব্যবহার হয়। যেমন শুদ্ধ/অশুদ্ধ চিহ্নিত করো।

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ উপরে আমরা যতি চিহ্ন কাকে বলে বা বিরাম চিহ্ন কাকে বলে কত প্রকার এবং কি কি বর্তমানে জ্যোতিচিহ্ন কয়টি এবং যতি চিহ্নের ব্যবহার এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি তোমাদের কাজে দিবে এবং তোমরা যদি আজকের পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ো তাহলে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় এখান থেকে কমন থাকবে এবং পাশাপাশি তোমাদের একাডেমিক প্রস্তুতির সহায়ক হবে। আজকের যতি চিহ্ন তো শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য তোমাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

Leave a Comment