যাকাত ফিতরা দেয়ার নিয়ম ২০২৩ | ফিতরার পরিমাণ | ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে

Rate this post

ফিতরা বা ফেতরা(فطرة) আরবী শব্দ, যা ইসলামে যাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরের সদকা) নামে পরিচিত। ফিতর বা ফাতুর বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয় যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন। যাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে। রোজা বা উপবাস পালনের পর সন্ধ্যায় ইফতার বা সকালের খাদ্য গ্রহণ করা হয়। সেজন্য রমজান মাস শেষে এই দানকে যাকাতুল ফিতর বা সকাল‌ের আহারের যাকাত বলা হয়।

বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন জনপ্রতির ফিতরা কত ২০২৩ নির্ধারণে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, ইসলামী শরিয়াহ মতে কিছু দ্রব্য যেমন আটা, জব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদির যেকোনো একটি দ্বারা।

সেক্ষেত্রে গম বা আটা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে অর্ধ সা’ বা ১কেজি ৬৫০ গ্রাম আটা বা গম অথবা এটির বর্তমান বাজার মূল্য ১১৫ টাকা প্রদান করতে হবে। সে ক্ষেত্রে যদি কেউ যব দ্বারা ফিতরা আদায় করে তাহলে তাকে ১সা` পরিমাণ অর্থাৎ তিন কেজি ৩০০ গ্রাম যব অথবা এটির বর্তমান বাজার মূল্য ৩৯৬ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।

কেউ যদি কিসমিস দ্বারা ফিতরা আদায় করে তাহলে তাকে ১সাপরিমাণ অর্থাৎ তিন কেজি ৩০০ কিসমিস কিসমিস অথবা এটির বর্তমান বাজার মূল্য ১৬৫০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে। আবার সামর্থ্য অনুযায়ী যদি কেউ খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করে তাহলে তাকে ১সা পরিমাণ অর্থাৎ তিন কেজি ৩০০ খেজুর অথবা এটির বর্তমান বাজার মূল্য ১৯৮০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।

সেক্ষেত্রে যাদের সামর্থ্য আছে যদি তারা পনির দ্বারা ফিতরা আদায় করে তাহলে তাকে ১সা` পরিমাণ অর্থাৎ তিন কেজি ৩০০ পনির অথবা এটির বর্তমান বাজার মূল্য ২৬৪০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে। যে দ্রব্যগুলো তারা ফিতরা আদায় করা যায় যেমন আটা, যব, কিসমিস খেজুর ও পনির দ্রব্যগুলোর বাংলাদেশের সকল বিভাগের বাজার মূল্যের সাথে সমন্বয় করে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইসলামে ফিতরা গম, আটা, জব, কিসমিস, খেজুর, পনির দ্বারা আদায় করার কথা থাকলেও আপনি সমপরিমাণ মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে ২০২৩ সালে গম বা আটা দিয়ে ১১৫ টাকা, জব দিয়ে ৩৯৬ টাকা, কিসমিস দিয়ে ১৬৫০টাকা, খেজুর দিয়ে ১৬৮০ টাকা ও পনির দিয়ে ২৬৪০ টাকা ফিতরা দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

ফিতরা যারা দেবেন

সামর্থ্যবান মুমিন নারী-পুরুষের ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্যবানদের অধীনস্ত পরিবারের সব সদস্যদের ফিতরাও দায়িত্বশীল ব্যক্তি আদায় করবেন। অর্থাৎ পরিবারের শিশু-কিশোর যদি অর্থের মালিক না হয় তবে বাবাই পরিবারের লোকদের ফিতরা আদায় করবেন।

ফিতরা আদায়ের সময়

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনর্থক কাজ ও অশ্লীলতা হতে পবিত্রকরণ এবং মিসকীনদের জন্য খাদ্যের উৎস হিসেবে রোযাপালনকারীর উপর ফিতরা ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে তা আদায়ক রবে তা কবুল যোগ্য ফিতরা হিসেবে গণ্য হবে।আর যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পর আদায় করবে সেটা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে।” [সুনানে আবুদাউদ (১৬০৯) এবং আলবানী এ হাদিসটিকে সহীহ আবুদাউদ গ্রন্থে ‘হাসান’ বলে আখ্যায়িত করেছেন]

ফিতরের অন্যান্য নাম কী বিভিন্ন হাদীসের বর্ণনা থেকে ফিতরার বিভিন্ন নাম পরিলক্ষিত হয় যা নিম্নে তুলে ধরা হল :

১। সাদাকাতুল ফিতর (ভঙ্গ করার দান) ২। যাকাতুল ফিতর (ভঙ্গ করার যাকাত) ৩। যাকাতুর রমজান (রমজানের যাকাত) ৪। যাকাতুল আবদান (দেহের যাকাত) ৫। যাকাতুস সাওম (রােযার যাকাত) ৬। সাদাকাতুর রুউস (মাথাপিছু সাদাকাহ)

যাকাত ও ফিতরার মধ্যে পার্থক্য কি

যাকাতের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদ পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী হলে সেই সাহিবে নিসাবের ওপরে যাকাত বাধ্যতামূলক হয়ে যায় শতকরা আড়াইভাগ হিসাব করে যাকাত দেওয়া, কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী হবার প্রয়োজন হয় না বরং ঈদুল ফিতরের দিন সকালে নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদের অধিকারী হলেই তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যায়

ফিতরা আদায়ের নিয়ম 2023

যাকাত ফিতরা দেয়ার নিয়ম ২০২৩ | ফিতরার পরিমাণ  | ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে

সদকাতুল ফিতরের বিধান

Leave a Comment