সকালে চা খাওয়ার উপকারিতা এবং চা খাওয়ার অপকারিতা

সকালে চা খাওয়ার উপকারিতা এবং চা খাওয়ার অপকারিতা

আজকে আমরা চা সম্পর্কিত আলোচনা করব। চায়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত দেখুন। চা বলতে সচরাচর সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়কে বোঝায় যা চাপাতা পানিতে ফুটিয়ে বা গরম পানিতে ভিজিয়ে তৈরী করা হয়। চা গাছ থেকে চা পাতা পাওয়া যায়। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। চা পাতা কার্যত চা গাছের পাতা, পর্ব ও মুকুলের একটি কৃষিজাত পণ্য যা বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়।

চা প্রধানত লাল চা, রং চা বা কালো চা এই ৩ নামেই পরিচিত। চা এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ গুনাগুন । ইংরেজিতে বলা হয় ব্ল্যাক টি। দুধ-চিনি ছাড়া এই লাল চা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। চা খেয়ে উপকার পেতে হলে অবশ্যই শুধু চা পাতা গরম করে পানি পান করতে হবে।

আমাদের অনেকেই দৈনিক সকালে এক কাপ চা না খেলে দিনটি যেন ভালোই কাটে না। আবার অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে কাজের ফাঁকে কিংবা অবসর কাটাতে এক কাপ চা না হলে ঠিক মানায় না। এমনকি গরমে অনেকেই বরফ দিয়ে ঠান্ডা চা বা আইসড টি পান করেন। আবার এমনও লোক আছে যার চা না খেলে মাথা গরম হয়ে থাকে।

তবে এই পানীয় শরীরের জন্য কতটুকু ভালো? এতে থাকা ক্যাফেইন কি শরীরের ক্ষতি করে? জানলে অবাক হবেন, শুধু স্বাদের জন্য চায়ের প্রচলন ঘটেনি।

চা এর রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ ক্ষমতা । যা শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক সকালে এক কাপ লাল চা বা রং চা খেলে কী ঘটে-

১। শীতের সময় একা প্লাজা হলে ভালই হয়। শীতে শরীর হয়ে পড়ে শুষ্ক ও রুক্ষ। তাই এ সময় অবশ্যই দিনে অন্তত একবার হলেও রং চা পান করুন। এতে শরীর আর্দ্র থাকবে। শীতে এক কাপ চা খেলে শরীর ও মন সতেজ থাকবে।

২। লাল চা এ বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন উপাদান শরীর সতেজ রাখে, মন ভাল রাখে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। লাল চায়ের অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা বেশি।

৩। লাল চায়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে চায়ের মধ্যে। শুধু সবুজ চায়েই নয় বরং লাল চায়েও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। লাল চা শরীর মন সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

৪। অনেকেই সকালে খালি পেটে লাল চা পান করি। সকালে খালি পেটে রং চা খেলে পেটে সামান্য অস্বস্তি হতে পারে। তবে ভয়ের কারণ নেই। বরং খালি পেটে এই চা খেলে খাদ্যনালীতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। তবে খালি পেটে লাগছে না খাওয়াই ভালো।

৫। হৃদরোগে যারা ভুগছেন তাদের জন্যও ব্ল্যাক টি হতে পারে কার্যকরী এক পানীয়। এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায় এই চা। হৃদ রোগীদের লাল চা মেডিসিন হিসেবে কাজ করে।

৬। লাল চা গবেষকদের তথ্য অনুসারে, নিয়মিত রং চা খেলে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

৭। তিদিন দুধ চা না খেয়ে রং চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। দৈনিক রং চা খেলে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। গাঁটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এই চায়ে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।

৮। লাল চা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে রং চা। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত এই চা খাদ্যতালিকায় রাখুন। এতে ডায়াবেটিস থাকবে নিয়ন্ত্রণে। বিভিন্ন প্রকার রোগ নিয়ন্ত্রণ করে লাল চা।

সূত্র: হেলথলাইন

লাল চা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর নিম্নে দেওয়া হলঃ

প্রতিদিন চা খেলে কি হয়?
সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে দিন শুরু করাটা যেন নিত্যনৈমিত্যিক অভ্যাসের মতো হয়ে গিয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, চায়ের অনেক উপকারী গুণাগুণ রয়েছে। তাঁদের মতে, ব্ল্যাক টি বা চিনি এবং দুধ ছাড়া চা স্বাস্থ্যের জন্য় খুবই উপকারী। ব্ল্যাক টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে।

খাওয়ার পর চা খেলে কি ক্ষতি হয়?
গবেষকেরা বলেন, চা-পাতা অ্যাসিডসমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ভারী খাবারের পরপরই চা গ্রহণ শরীরের আয়রন বা লোহার শোষণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ভারী খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে বা পরে চা পান যেতে পারে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নয়। খাবার পরপরই ঘুমিয়ে পড়লে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না।

লিকার চা খেলে কি হয়?
লিকার চা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকার কারণে রোগ দ্রুত হয় না এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ফলে নিয়মিত চা পানে এর উপকার পাওয়া যায়।

শেষ কথা হচ্ছে চা এর অপকারিতা উপকারিতা বেশি। আমরা উপরে চায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যা মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চা হার্ট অ্যাটাক থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তো সর্বোপরি কথা হচ্ছে আজকের আলোচনায় যদি কোন ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবার শুভ কামনা করে এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *