হোস্টিং কি? (What is hosting) হোস্টিং এর সুবিধা

Rate this post

হোস্টিং হচ্ছে এমন একটি পরিসেবা যার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট টি সব সময়ের জন্য চালু থাকবে । সেই সাথে ওয়েবসাইট টি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড প্রদর্শন করতে পারবেন। মূলত, আপনার ওয়েবসাইটের Content, Images, Videos, এবং বিভিন্ন File সার্বক্ষণিক তথা দিনে ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন চালু রাখার জন্য একটি স্পেস বা জায়গা প্রয়োজন। আর সেই নির্ধারিত স্পেস বা জায়গা কেই বলা হয় ওয়েবসাইটের হোস্টিং বা ওয়েব হোস্টিং (Web Hosting) । আবার হোস্টিং কে সাধারনত সার্ভার (Server) বলা হয় এবং কখনও এটিকে ওয়েব সার্ভার ( Web Server) ও বলা হয়ে থাকে।

সেই সাথে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে এই ওয়েব হোস্টিং কাজ করে থাকে?

ধরুন আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে। যখন কোন একজন আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইনটি ব্রাউজারে লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করবে তখন ডোমেইন নামটি IP Address এ রূপান্তরিত হয়ে ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির কম্পিউটারে নিয়ে যাবে মূলত যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের Content, Images, Videos, এবং বিভিন্ন ফাইলগুলো জমা করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে জমা করা ফাইলগুলো তৎক্ষণিক ভাবে ভিজিটর বা ইউজারের ব্রাউজারে পাঠানো হয়। তারপর ইউজার সেই ওয়েবসাইট টি দেখতে পান। এভাবেই মুলত ওয়েব হোস্টিং কাজ করে থাকে।

জনপ্রিয় ওয়েব হোস্টিং সমূহ:

  • শেয়ার হোস্টিং (share hosting)
  • ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং(V.P.S – virtual private server)
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং (dedicated hosting)
  • ক্লাউড হোস্টিং (cloud hosting)

শেয়ার হোস্টিং কি? (What is share hosting)

শেয়ার হোস্টিং মানে হলো, ওয়েব হোস্টিং কে বলা হয় শেয়ার করা। মানে একটি ওয়েব সার্ভার অনেক গুলো গুলো ওয়েবসাইট শেয়ার করবেন। মনে করুন আপনার একটি ঘর রয়েছে, সেখানে আপনারা ফ্যামিলির সকল সদস্যরা এক সাথে শেয়ার করে বা ভাগ করে থাকছেন।

এখানে আপনার ঘরটি হলো একটি ওয়েব সার্ভার (web server) এবং আপনি ও আপনার ফ্যামিলি হলো যারা ভাগ করে থাকছেন তারা হলো একটি একটি ওয়েবসাইট।

এতে আপনার লাভ হলো আপনার ঘর ভাড়া ফ্যামিলি সবাই মিলে দিতে পারবেন। এতে আপনার টাকা কম খরচ হবে। শেয়ার হোস্টিং এর ক্ষেত্রে একটি ওয়েব সার্ভারে এক সাথে অনেক গুলো ওয়েবসাইট শেয়ার করতে পারবে এবং যার ফলে আপনার অনেক কম টাকা খরচ হবে।

শেয়ার্ড হোস্টিং এর সুবিধা

এর মধ্যে সাধারণত ফাইল আপলোড এবং ডাউনলোড করার জন্য একটি FTP ক্লায়েন্ট, MySQL ডাটাবেস টুলস এবং একটি ফাইল ম্যানেজার অন্তর্ভুক্ত থাকে। কিছু হোস্ট আপনাকে একটি অফসাইট মেলবক্স সেট আপ করতে সাহায্য করার জন্য আপনার ডোমেন নামের সাথে পূর্ব-কনফিগার করা ই-মেইল ঠিকানাও প্রদান করে। অনেক কম দামে কিনতে পারবেন। এটা নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য সেরা হোস্টিং। শেয়ার হোস্টিং এর দামের কথা বললে আপনি বাংলাদেশের টাকায় ১২০ থেকে ২০০ টাকায় মাসিক প্যাকেজ পেয়ে যাবেন। তাছাড়া অনেক বড় বড় কোম্পানি গুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতে অনেক সময় share hosting গুলো দিয়ে থাকে।

ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং কি?

ভার্চুয়াল প্রাইভেট গুলো শেয়ার হোস্টিং এর তুলনায় হাজার হাজার গুন ভালো। আসলে এই সার্ভার আমরা তখনই ব্যবহার করি যখন আমাদের ওয়েবসাইট ভালো পরিমানে ভিজিটর্স আসে।

এক কথায় আমাদের ওয়েবসাইট যখন পুপলার হয়ে যায় তখন virtual private server ব্যবহার করা হয়। প্রথম অবস্থায় V.P.S ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন আসে না।

ভিপিএস (VPS) হোস্টিং বলতে আমরা কী বুঝি? মনে করুন, আপনার একটি বিল্ডিং এ অনেক গুলো রুম রয়েছে। ঠিক সেই ভাবে এই প্রকারের হোস্টিং সার্ভার গুলো ভাগ করা হয়।

যখন সাইটের ডাটাবেস 10GB তে পৌঁছায় এবং ব্যান্ডউইথের প্রয়োজনীয়তা প্রতি মাসে 1000GB অতিক্রম করে তখন একজনকে VPS হোস্টিং পরিষেবাগুলি সন্ধান করা শুরু করতে হবে

ভিপিএস হোস্টিং সুবিধা

১। VPS হোস্টিং হল সেই সব কোম্পানির জন্য একটি দুর্দান্ত বিকল্প যেগুলি ওয়েব হোস্টিং দিয়ে শুরু করতে চায় ।

২। ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং কোম্পানি. এই ব্লগ পোস্টে, আমরা VPS হোস্টিংয়ের সুবিধাগুলি এবং কেন এটি অনেক ব্যবসার জন্য একটি চমৎকার পছন্দ বলে মনে করি।

৩। ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভারগুলি আপনার ব্যবসার ডেটা সুরক্ষা বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায়। এর কারণ হল VPS হোস্টিং সার্ভারগুলি তাদের নিজস্ব বিচ্ছিন্ন পরিবেশে রাখা হয় যার বাকি নেটওয়ার্কগুলিতে সীমিত অ্যাক্সেস রয়েছে, যার অর্থ হল যে কেউ যদি একটি সার্ভারে প্রবেশ করে তবে তারা অন্যগুলিতে প্রবেশ করতে পারে না।

৪। যেখানে আপনার কিনে নেওয়া রুমে শুধু আপনার সেভাবে v.p.s সার্ভারে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের অধিকার থাকবে। এখানে আপনি যে ভাগ কিনে নিবেন সেটা শুরু আপনি নিজে ব্যবহার করতে পারবেন।

৫। এটা প্রাইভেট ওয়েব সার্ভারের মতো। যার কারণে এই হোস্টিং গুলো অনেক দ্রুত কাজ করে। এবং ভিজিটর্স বা ট্রাফিক থাকার জন্য বেশ লাভজনক বলে বলা হয়।

ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং কি?

ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং হল এক ধরনের ওয়েব হোস্টিং যেখানে সার্ভার তার সমস্ত হার্ডওয়্যার সংস্থান একটি একক ব্যবহারকারীকে বরাদ্দ করে । সার্ভারের প্রসেসর, র‍্যাম, স্টোরেজ এবং ব্যান্ডউইথ – সবকিছুই সেই ব্যবহারকারীর জন্য বরাদ্দ করা হয়। ডেডিকেটেড হোস্টিং-এ ডেডিকেটেড সার্ভারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট হোস্টিং করা হয়।

ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং হল এক ধরনের ওয়েব হোস্টিং যেখানে একটি ফিজিক্যাল সার্ভার (বা সার্ভার) হার্ডওয়্যার রিসোর্স একচেটিয়াভাবে একক ব্যবহারকারীর ওয়েবসাইটে উৎসর্গ করা হয়

ডেডিকেটেড হোস্টিং হল একটি হোস্টিং ওয়েব পরিষেবা যেখানে ক্লায়েন্ট একটি সম্পূর্ণ সার্ভার ইজারা দেয় যা অন্য কারো সাথে শেয়ার করা হয় না। এই হোস্টিং প্রদানকারী তাদের তাদের মেশিন কাস্টমাইজ করতে, তারা যেকোন সফ্টওয়্যার ইনস্টল করতে এবং তাদের পছন্দের উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করতে দেয়।

ডেডিকেটেড হোস্টিং এর সুবিধা

১। ডেডিকেটেড হোস্টিং হল সেই সার্ভিস যেটিতে একটি সার্ভারের জন্য একটিমাত্র ওয়েবসাইটকে রাখা হয়।

২। সম্পূর্ণ সার্ভার দিয়ে হোস্ট করার কারণে ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের খরচও বেশি, কিন্তু সুবিধাও বেশি।

৩। ডেডিকেটেড হোস্টের সবচাইতে বড় সুবিধা হল আপনি যেকোনো বড় ওয়েবসাইট বা হাই-ট্রাফিকের ওয়েবসাইটকে এই হোস্টিংয়ের আওতায় আনতে পারবেন।

৪। যেহেতু আপনার ওয়েবসাইটের জন্য পুরো সার্ভারটিই ব্যবহৃত হচ্ছে, আপনার সার্ভার ডাউন হওয়ার সম্ভাবনাও তাই কম থাকে।

৫। এছাড়াও আপনি অনেক বেশি ব্যান্ডউইথ এবং স্টোরেজ পাওয়ার কারণে আপনার ওয়েবসাইট কোয়ালিটিও অনেক উন্নত করতে পারবেন।

৬। তবে পুরো সার্ভারটি একটিমাত্র ওয়েবসাইটের জন্য ডেডিকেটেড থাকে বলে এই হোস্টিং এর মূল্য অপেক্ষাকৃত একটু বেশিই হয়ে থাকে।

৭।কিন্তু হাই ট্রাফিক এবং হাই কোয়ালিটি ওয়েবসাইট মেইনটেনেন্স এর জন্য ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের সত্যিই বিকল্প নেই।

ক্লাউড হোস্টিং কি? (What is Cloud Hosting in Bengali/Bangla?)

ক্লাউড হোস্টিং এমন একটি হোস্টিং যা বিভিন্ন কম্পিউটারের সমন্বয়ে তৈরি একটি ক্লাস্টার্ড সার্ভার। এটি এমন একটি মডেল যা ভার্চুয়ালি ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের যাবতীয় সব রিসোর্স ভিন্ন ভিন্ন ফিজিক্যাল সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

ক্লাউড হোস্টিং কিভাবে কাজ করে?
ক্লাউড হোস্টিং যেভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্যে গুগল সার্চকে উদাহরণ হিসেবে নেয়া যেতে পারে। আমরা যখন গুগলে কোন কিছু সার্চ দেই, সার্চ ইঞ্জিন অসংখ্য কম্পিউটারের নেটওয়ার্কে (ক্লাউড) ঢুকে সঠিক তথ্যটি নিয়ে আসে। ক্লাউড হওয়ায় এর জন্যে গুগলের সার্ভারে কোন রকম লোড পড়ে না।

ক্লাউড হোস্টিং এর সুবিধা (Advantages of Cloud Hosting)


১। যে কোন হোস্টিংই কোন না কোন কারণে ডাউন হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ক্লাউড হোস্টিং কখনোই ডাউন হওয়ার সম্ভাবণা রাখে না।

২। ক্লাউড হোস্টিংয়ে ডাটা ডেলিভারি হয় অত্যন্ত দ্রততার সঙ্গে। ফলে, ক্লাউড হোস্টিংয়ে থাকা ওয়েবাসইটের স্পিড থাকে সুপার ফাস্ট।

৩। ক্লাউড হোস্টিংয়ে যে কোন ধরণের ভিডিও স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট হোস্ট করা যায় যা অন্যান্য হোস্টিং সার্ভিসে হোস্ট করা খুবই রিস্কি।

৪। ক্লাউড হোস্টিংয়ে সিডিএন সুবিধা থাকায় এখানে থাকা ওয়েবসাইট ভিজিট করলে ভিজিটরের কাছে ডাটা চলে আসে সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা হোস্টিং সার্ভার থেকে।

৫।ক্লাউড হোস্টিং সার্ভারে থাকা ডাটা অ্যাক্সেস করা যায় পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন কম্পিউটার ব্যবহার করে।

৬। ক্লাউড হোস্টিংয়ে থাকা ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি নিয়ে বিন্দু মাত্র সংশয়ের অবকাশ থাকে না।

Leave a Comment